কক্সবাজার জোর পেকুয়া উপজেলার চৌমুহুনী স্টেশনের একটি তেল ও গ্যাস সিলিন্ডারের দোকানে ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৭ ব্যক্তি আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গতকাল রবিবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে পেকুয়া উপজেলার সদরের জনাকীর্ণ চৌমুহনী স্টেশনে এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে আশেপাশের আরো ৪টি দোকান, একটি গাড়ির কাউন্টার ও ১টি বসতঘর সম্পুর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
এসময় ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট দীর্ঘ ৩ ঘণ্টা চেষ্টার পর রাত সাড়ে ৮টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ রাত ৯টার দিকে অগ্নিকান্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও চৌমুহনী এলাকার ব্যবসায়ীরা জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে চৌমুহনী স্টেশনের সানলাইন গাড়ির কাউন্টারের পাশে অবস্থিত বারবাকিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা রিয়াজ উদ্দিনের মালিকানাধীন একটি গ্যাসের সিলিন্ডার ও জ্বালানি তেলের দোকান রিয়া এন্টারপ্রাইজ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিড়িও চিত্রে দেখা যায়, হঠাৎ করেই দোকানের ভেতরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে উঠে। এসময় আশপাশের কয়েকজন দোকানদার অগ্নিনির্বাপকের সাহায্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে কিন্তু আগুনের তীব্রতা এতই বেশী ছিল যে কয়েক মিনিটের মধ্যেই আগুন দোকানের বাইরে চলে আসে এবং আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় অন্তত ৭ ব্যক্তি গুরুতর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
তবে দোকনের কর্মচারী বাদশা (৪০) নামের এক ব্যক্তির শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গিয়ে তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রমতে আহত ব্যক্তিরা হলেন শফিউল (৫৫), মোরশেদ (৩৫), মুনির আহমদ (৪৫), জালাল আহমদ (৩০), আবুল হাসনাত (৪০), ও শহীদ জিয়াউর রহমান উপকূলীয় কলেজের ছাত্র মিসবাহ উদ্দিন (২২)।
এছাড়াও দমকল বাহিনীর ৩ সদস্য সামান্য আহত হলে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পেকুয়া ফায়ার সার্ভিস।
পেকুয়া ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ মো. শোহাইব হোসেন মুন্সি বলেন, “ফায়ার সার্ভিসের পেকুয়া, চকরিয়া, বাঁশখালী ও সাতকানিয়ার ৫টি টিম দীর্ঘ ৩ ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি। আমরা এখনো অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করতে পারিনি। ঘটনার সময় আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তা করতে গিয়ে বেশ কয়েকজন সাধারণ মানুষও আহত হয়েছেন। আমাদেরও ৩ কর্মী সামান্য আহত হয়েছেন। সবাইকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।”
এ বিষয়ে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমা বলেন, “পেকুয়ায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে একটি গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান, ১টি মুদির দোকান, ২টি কুলিং কর্নার, একটি বাড়ি ও একটি গাড়ি কাউন্টার পুড়ে গেছে। ফায়াস সার্ভিস কর্মীরা প্রাথমিকভাবে প্রায় কোটি টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতির একটি পরিমাণ নির্ধারণ করেছে।
এদিকে, পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, “পেকুয়ার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে। কেউ লাইসেন্সবিহীন পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা না নিয়ে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের মওজুদ করার প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া, কক্সবাজার জেলায় খুব শীঘ্রই এসব অবৈধ মজুদকারীর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।”
পাঠকের মতামত